মুখে ব্রণ কমানোর উপায় - ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়
মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই। প্রায় প্রত্যেকেরই মুখে ব্রণ হয় বা হয়েছিল। এটি অতি সাধারন একটি বিষয়। ব্রণ সাধারনত ছোট ছোট, গোল গোল, ফুসকুরি দানা বা গোটার মত হয়। মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত বা দূর করা উচিত সেই সব বিষয় নিয়েই আজকের এই আর্টিকেলটি।
আপনি যদি আপনার ব্রণ নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকেন তাহলে মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এবং সেই সাথে মুখে ব্রণ কেন হয় বা উঠে সেই বিষয়টিও আপনি জেনে রাখুন।
ভূমিকা
কিছু ব্রণ আছে যা খুব যন্ত্রনাদায়ক হয়। যদি সঠিক সময় ব্রণের চিকিৎসা না করানো যায় ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে বা দাগের সৃষ্টি হতে পারে। ব্রণ সাধারনত মুখে হয়, তবে মুখের পাশাপাশি পিঠ, ঘাড় এবং শরীরের বিভিন্ন যায়গায়ও হতে পারে। ব্রণ ছেলে মেয়ে উভয়েরই হয়। ব্রণ সাধারনত বয়সন্ধিকালের একটি সমস্যা।
মুখে ব্রণ কমানোর উপায়
মুখে ব্রণ কমানোর উপায় জানা না থাকলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। অনেক মানুষের কিছু নির্দিষ্ট সময়ে ব্রণ হওয়ার ঝুকি থাকে। অল্প কয়েকজন ব্যক্তির ব্রণ থাকতে পারে যা খুব হালকা এবং দ্রুত অদৃশ্য হয়। কিছু মানুষের গুরুতর ব্রণ হয় এবং শেষ পর্যন্ত থাকে যা খুব দৃঢ় এবং রোগির জন্য খুব কষ্টদায়ক হতে পারে। বিশেষ করে বয়সন্ধিকালে।
আরো পড়ুনঃ মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা কি।
ব্রণ একজন ব্যক্তির জীবনের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসায় অর্ন্তভূক্ত মৌখিক ঔষধ, মৌখিক রেটিনয়েড, সাময়িক ক্রিম, ক্যামিকেল পিল এবং লেজার দিয়ে মুখ থেকে ব্রণ দূর করা সম্ভব। এটা যুক্তিযুক্ত যে কোনো এন্টি-এক্নি ঔষধ নেওয়ার আগে ত্বক বিষেষজ্ঞের আপনি পরামর্শ নিন। বাজারে এমন অনেক ক্রিম পাওয়া যায় যা মাখলে মুখ থেকে ব্রণ দূর হয়ে যায়।
আমার নিজের মুখে অনেক ব্রণ ছিল যেগুলো অনেক বড় বড় হয়ে থাকতো, মুখে হাত দিলে ব্যাথা করতো। তারপর আমি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে (DAPGEL) নামক একটি ব্যবহার করি এবং খুবই উপকৃত হই। আমি আপনাদের সেই ক্রিম ব্যবহার করতে বলবো না কারণ একেক মানুষের ত্বক একেক রকম। এই জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়
মুখে ব্রণ কমানোর উপায় বা ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায় কি? আমরা এই বিষয়টি নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করছি। মুখের ব্রণ হচ্ছে এমন একটি সমস্যা যেটি তাৎক্ষণিক আপনার স্টাইল, আপনার চেহারা, আপনার আত্মবিশ্বাসকে ধ্বংস করে ফেলবে। আপনার মুখে ব্রণের সমস্যা থাকলে আর্টিকেল আপনি মন দিয়ে পড়ুন আশা করি আপনার কাজে দিবে।
এক নাম্বারে যে উপায়টি মেনে চলতে বলবো সেটি হচ্ছে দিনে অন্ত্যত ২-৩ বার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। কারণ আমরা সারাদিন যে রোদ্র এবং ধুলোবালিতে ঘুরাঘুরি করি, কাজ কর্ম করি যার ফলে আমাদের মুখের যে বিভিন্ন লোমকূপ গুলো রয়েছে, যে লোমকূপের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বিভিন্ন দূষিত পদার্থ গুলো বের হয়ে যায়। সেগুলো ধুলোবালিতে আটকে যায়।
ফলে আমাদের ব্রণের সমস্যা, পিমপলের সমস্যা গুলো দেখা দেয়। আমরা যদি সকালে, বিকেলে এবং রাতে এই তিন বেলা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার অভ্যাস করতে পারি তাহলে আমাদের এই ব্রণের সমস্যা থেকে আমরা সহজেই মুক্তি পেয়ে যাব। আর কোনোদিন আমাদের ব্রণ হবে না, তার সাথে আমাদের ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পাবে।
দুই নাম্বারে যে উপায়টি মেনে চলতে বলবো সেটি হচ্ছে দিনে অন্ত্যত ৬-৭ গ্লাস পানি পান করতে। সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস পানি করুন। তাতে কি হবে? তাতে আমাদের পরিপাকতন্ত্র এবং হজমতন্ত্র সঠিক ভাবে কাজ করতে পারবে যার ফলে আমাদের ব্রণের সমস্যা বা পিমপলের সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে। তাই দিনে অন্ত্যত ৬-৭ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
তিন নাম্বারে যে উপায়টি মেনে চলতে বলবো সেটি হচ্ছে ব্রণে কখনও খোচাখোচি করা চলবে না। আমার অনেক ভাই বন্ধুরা রয়েছে যারা ব্রণ দেখলেই খোচাখোচি শুরু করে, ব্রণ দেখলেই টিপাটিপি শুরু করে যেটি মোটেও কাম্য নয়। তাতে কি হয়, ব্রণের সমস্যা বা পিমপলের সমস্যা গুলো বেড়ে যেতে পারে বা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাই কখনও ভুলেও ব্রণে হাত দিবেন না, খোচাখোচি করবেন না এবং ব্রণ টিপবেন না। এমনকি মুখ মুছার সময়ও তোয়ালে অথবা গামছা দিয়ে আলতো করে মুখ মুছবেন।
মুখে ব্রণ কেন হয়
মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে অনেক কিছুই জেনেছি। ব্রণ খুবই কমন একটা চর্মরোগ। ব্রণ সাধারনত ১৩-১৪ বছর বয়স থেকে শুরু হয়ে থাকে। অর্থাৎ ১৩-১৪ বছর বয়সে যখন হরমোনের তারতাম্য হয় শরীরে তখনই ব্রণের সৃষ্টি হয়ে থাকেবা ব্রণ উঠে থাকে। ব্রণ সাধারনত মুখমন্ডল, গলা, বুক ও পিঠে হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ রক্ত দিলে কি কি উপকার হয়
যারা অতিরিক্ত দুঃচিন্তা করে তাদের ক্ষেত্রে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি থাকে। অর্থাৎ অতিরিক্ত দুঃচিন্তার কারণেও ত্বরক ব্রণ হতে পারে। ব্রণের প্রধান কারন হলো ঘাম। একটা মানুষ যদি ঘামে এবং ত্বক তৈলাক্ত থাকে তাহলে ব্রণ হতে পারে।
মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত
মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কিশোর-কিশোরীদের ব্রণের সমস্যা দেখা যায়। ব্রণ মূলত বয়সন্ধিকালের একটি সমস্যা। তবে বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষদের ব্রণের সমস্যা দেখা যেতে পারে। ব্রণের সমস্যায় তেমন চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কিছু ভেষজ ব্যবহার করে থুব সহজেই ব্রণ দূর করা সম্ভব।
ত্বকে ভেষজ ব্যবহারের সুবিধাটা হলো এর কোনোও পার্শপ্রতিক্রিয়া থাকে না। বরং একটি সমস্যা সারাতে গিয়ে বোনাস হিসেবে অন্যান্য উপকারও পওয়া যায়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
- মেথি শাকের পাতা ব্রণে ৩০ মিনিট রেখে পরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দিনে একবার করে চালিয়ে যান টানা একমাস। দেখবেন আপনার ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে গেছে।
- দারুচিনি পিষে তাতে লেবুর রস দিন। ১০-১৫ দিন ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে গেছে।
- মধু ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে, তাই সরাসরি মধুও লাগাতে পারেন ব্রণে।
- অনেক ফলের খোসাও এক্ষেত্রে কাজ করে। ডালিমের তোসা চুর্ণ করে তাতে লেবুর রস মেখে লাগান এ কাজে ডালিমের শুকনো খোসাটাই বেছে নিন।
- নিয়মিত পাকা টমেটোর রস ব্রণে লাগিয়ে ঘন্টাখানেক রেখে দিন, এরপর ধুয়ে ফেলুন। টমেটোর ভিটামিন এ ও সি ত্বকের সাস্থ্য ঠিক রাখে।
এইসব কাজ নিয়মিত করলে আপনার ব্রনের সমস্যা নিমিষেই ঠিক হয়ে যাবে।
মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত ঘরোয়া উপায়
মুখে ব্রণ কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে ঘরোয়া উপায় সবচেয়ে বেশি কার্যকারী। আপনি যদি আপনার ব্রণ নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি মন দিয়ে পড়ুন।
- দুধ এবং জায়ফল একসাথে মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখুন। এভাবে ১৫ দিন ব্যবহার করুন।
- অরেকটি কার্যকারী উপাদান হলো রসুন। ব্রণে রসুন বাটা লাগালে ব্রণের সাথে সাথে ব্রণের দাগ ও চলে যায়।
- কমলার খোসা পানি দিয়ে পেস্ট করে ব্রণে ২০-৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। ২০ দিন ব্যবহার করুন তার পরে আপনি ফল পাবেন।
- ত্বক তৈলাক্ত হলে মুলতানি মাটি, লেবুর রস, টকদই মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ব্রণে বা ব্রণের দাগে লাগান উপকার পাবেন। অন্য দাগ দুর করতেও এই পেস্ট অনেক কাজের।
- রূপ চর্চায় কাঁচা হলুদের ব্যবহার অনেক দিনের। কাঁচা হলুদ বাটা ব্রণ দূর করতেও কাজ করে।
- পাকা কলার পেস্ট ব্যবহার করলেও অনেকের ব্রণ চলে যাবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
মুখে ব্রণ কমানোর উপায় এবং ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনি লেখাগুলো মন দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে ব্রণ নিয়ে আপনার যত প্রশ্ন ছিল তার উত্তর পেয়ে যাবেন। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনি মন দিয়ে পড়েছেন এবং বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আমার আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা আপনার উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ধন্যবাদ।
সাফারি a2z এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url