২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে - ঈদুল আযহা কত তারিখে হবে ২০২৪
২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? এই বিষয়টি অনেকেই যানতে চাই। মুসলমানদের জন্য কোরবানির ঈদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে অন্যতম। ঈদ অর্থ আনন্দ, তাই কোরবানির ঈদ কাকে বলা হয় এই বিষয়টি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আজকের এই আর্টিকেলে ২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আপনি যদি এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
ভূমিকা
ঈদ মানেই হচ্ছে আনন্দ এবং সবাই মিলে একত্রিত হওয়া। প্রতি বছর দুইটি ঈদ আসে, প্রথমে আসে রোজার ঈদ এবং সাধারনত ঈদুল ফিতরের দুই মাস দশ দিনের মাথায় ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ পালনের নিয়ম। ২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? আসুন তবে জেনে নেওয়া যাক।
২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে
২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? এই বিষয়টি অনেক মানুষেরই জানা নেই। মুসলমানদের আল্লাহ প্রদত্ত দুটি আনন্দের বিধানের মধ্যে অন্যতম একটি হলো ঈদুল আযহা। ঈদুল ফিতরের দুই মাস দশ দিন পর মুসলমান রা ঈদুল আযহা পালন করে থাকেন। ঈদুল আযহা যা বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত।
কোরবানির ঈদ জুন মাসের ১৭ তারিখ, বাংলা মাসের ২এ আষাঢ় তারিখ, জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ রোজ সোমবার। ঈদুল আযহা মোট ৩ দিন থাকে। অর্থাৎ জিলহজ্জ মাসের ১২ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত। যেহেতু আরবি মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল তাই এক দিন আগে ও পরে হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব?
মুসলমানদের কাছে কোরবানির ঈদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদাত। দুইটি ঈদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঈদ বলা হয় ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ। কেননা রোজার ঈদে আল্লাহ তায়ালার সকল বান্দা ৩০টি রোজা রেখে আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করে ঈদ উৎযাপন করে। এবং ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদে আল্লাহর নামে নিজের পছন্দের জিনিসকে কোরবানি করা বোঝায়।
ঈদুল আযহা কত তারিখে হবে ২০২৪
ঈদুল আযহা কত তারিখে হবে ২০২৪? আমরা এই বিষয়টি নিয়ে এই মুহুর্তে আলোচনা করছি। প্রিয় পাঠক, হিজরী বর্ষপুঞ্জি হিসেবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিন ধরে ঈদুল আযহা পালন করা হয়। হিজরী চঁন্দ্র বছরের গননা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার মাঝে ২ মাস ১০ দিনের ব্যবধান থাকে।
এবার ২০২৪ সালের ১০ই জিলহজ্জ বা কোরবানির ঈদ হতে পারে জুন মাসের ১৬ তারিখ বা ১৭ তারিখে। বাংলাদেশে সাধারনত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাত এই সকল দেশের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। সেই হিসেবে বাংলাদেশের কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে। তবে চাঁদ দেখার নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।
ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ
২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় দুটি ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। দিন কয়েক আগে সারা বিশ্বে উৎযাপিত হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। সাধারনত ঈদুল ফিতরের দুই মাস দশ দিনের মাথায় ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ পালনের নিয়ম।
এরই মধ্যে জানা গেল ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ। গত ১০ই এপ্রিল সৌদি আরবে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী ২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ হতে পারে ১০ জিলহজ্জ বা ১৬ জুন। দেশটির চাঁদ দেখা কমিটি এই কথাটি জানিয়েছেন। বাংলাদেশে সাধারনত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাত এই সকল দেশের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়।
ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কোরবানি করার নির্দেশ দেন। আদেশের পর তিনি তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানির সিদ্ধান্ত নেন। এতে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন এবং ইসমাইল (আঃ) এর পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়।
এই ঘটনাকে স্মরন করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মের লোকেরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে হিজরী বর্ষপুঞ্জি হিসেবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ, ১১ তারিখ, এবং ১২ তারিখ তিন দিন পর্যন্ত পশু কোরবানি করে থাকেন।
কোরবানির ঈদ কাকে বলা হয়
কোরবানির ঈদ কাকে বলা হয়? চলুন এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত ভাবে জেনে নেই। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ইদুল ফিতর এবং ইদুল আযহা অর্থাৎ (রোজার ঈদ এবং কোরবানির ঈদ)। ঈদ হলো আরবী শব্দ, যার মানে যে জিনিসটা স্বভাবগত, এর আরেকটা মানে ফিরে আসা। এক কথায় ঈদ মানে যেটা বার বার হয়ে থাকে।
আর এটা দিয়ে নির্দিষ্ট কোনো জায়গার কথাও বোঝানো হয়। যেখানে মানুষ কিছুদিন পর পর আসে। এর আরেকটা মানে একটা সময়সীমা যখন নির্দিষ্ট কোনো কাজ করা হয় নিয়মিত ভাবে। মানুষ এই উৎসবে ফিরে আসে প্রতি বছর অর্থাৎ ঈদ। এই দিনটা কে ঈদ বলা হয় এর কারণ এটা আনন্দ ফিরিয়ে আনে প্রতি বছর।
বাংলাদেশে কুরবানীর ঈদ কবে হবে
২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? এই বিষয়টি আলোচনা করার সময় আমরা এটি খুব ভালোভাবেই উল্লেখ করেছি যে বাংলাদেশে কোরবানি ঈদ কবে অনুষ্ঠিত হবে? আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে আবারও এই বিষয়টি উল্লেখ করছি। হিজরী বর্ষপুঞ্জি হিসেবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিন ধরে ঈদুল আযহা পালন করা হয়। হিজরী চঁন্দ্র বছরের গননা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার মাঝে ২ মাস ১০ দিনের ব্যবধান থাকে।
এবার ২০২৪ সালের ১০ই জিলহজ্জ বা কোরবানির ঈদ হতে পারে জুন মাসের ১৬ তারিখ বা ১৭ তারিখে। বাংলাদেশে সাধারনত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাত এই সকল দেশের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। সেই হিসেবে বাংলাদেশের কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে। তবে চাঁদ দেখার নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।
কোরবানির ঈদের গুরুত্ব
কোরবানি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে এক বিশেষ অনুগ্রহ। কারণ বান্দাহ কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে। কোরবান শব্দটি কোরবুন শব্দ থেকে উৎকলিত। অর্থাৎ নিকটবর্তী হওয়া, সান্নিধ্য লাভ করা। যেহেতু আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার মাধ্যম হলো কোরবানি তাই এর নাম কোরবানির ঈদ।
কোরবানি হলো ইসলামের একটি মহান নির্দেশন। কোরআন মাজীদে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন: তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো এবং পশু কোরবানি করো। (সুরা আল-কাউসার: ২)। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেছেন: যে ব্যাক্তি সামর্থ্যথাকা সত্ত্বেও কোরবানি না করে, সে যেনো আমাদের ঈদগাহের ধারে না আসে। (ইবনে মাজাহ ৩১২৩ হাদীস)।
কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তার ইবাদত করার জন্য। তাই আল্লাহ তায়ালার বিধান তার নির্দেশিত পথে পালন করতে হবে। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কোরবানির বিধান আমাদের উপর আসার বেশ কিছু উদ্দেশ্যও রয়েছে:
- শর্তহীন আনুগত্য: আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে যে কোনো আদেশ দেওয়ার ইখতিয়ার রাখেন। এবং বান্দা তা পালন করতে বাধ্য। তাই তার আনুগত্য হবে শর্তহীন।
- তাকওয়া অর্জন: তাকওয়া অর্জন ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় না। একজন মুসলিমের অন্যতম চাওয়া হলো আল্লাহর নৈকট্য অর্জন পশুর রক্ত প্রবাহিত করার মাধ্যমে কোরবানি দাতা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য অর্জন করে।
- আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা: প্রত্যেক ইবাদতই আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ বহন করে। তাই কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা হয়।
- ত্যাগ করার মহান পরীক্ষা: কোরবানির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ত্যাগ করার মহান মানসিকতা তৈরি করা।
কোরবানি করা হয় কেন
২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? এ বিষয়টি সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি। ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কোরবানি করার নির্দেশ দেন। আদেশের পর তিনি তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানির সিদ্ধান্ত নেন।
আরো পড়ুনঃ কুরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজিব?
এতে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন এবং ইসমাইল (আঃ) এর পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়। এই ঘটনাকে স্মরন করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মের লোকেরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে হিজরী বর্ষপুঞ্জি হিসেবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ, ১১ তারিখ, এবং ১২ তারিখ তিন দিন পর্যন্ত পশু কোরবানি করে থাকেন।
কাদের কোরবানি করতে হবে
কুরবানী কে আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর আবশ্যক করেছেন। কুরবানীর হুকুম সম্পর্কে যদি বলি তাহলে বলবো যে এটা ওয়াজিব, হানাফির মাযহাবে এটি হচ্ছে ওয়াজিব। যেহেতু আমাদের বাংলাদেশের বেশির ভাগই হচ্ছে হানাফির মাযহাবের অনুসারী তাই এটি আমাদের জন্য অবধারিত। যাদের কে আল্লাহ তায়ালা সম্পদ দিয়েছেন, টাকা পয়সার মালিক বানিয়েছেন, সাবলম্বী করেছেন আমাদের প্রত্যেকের উপর কিন্তু এই কুরবানী করাটা ওয়াজিব, জরুরী, বাধ্যতামূলক।
কোরবানির ঈদের ফজিলত
কোরবানির ঈদের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
- কোরবানি দাতা কোরবানির পশু জবাই এর মাধ্যমে হযরত ইব্রমি (আঃ) ও শেষ নবী মহানবী (সাঃ) এর সুন্নাতের বাস্তবায়ন করতে পারে।
- কোরবানির রক্ত প্রবাহিত করার মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য অর্জিত হয়।
- কোরবানি আল্লাহ তায়ালার অন্যতম নিদর্শন।
- কোরবানির প্রবাহিত রক্ত আল্লাহ তায়ালার কাছে দুইটি কুচকুচে কালো ছাগলের চেয়েও বেশি প্রিয় ও পবিত্র।
- কোরবানির মাধ্যমে সামাজিক ও পারিবারিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করার বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি হয়। সমাজে আল্লাহ তায়ালার বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রেরণা তৈরি করে।
- কোরবানিতে গরীব মানুষের অনেক উপকার হয়। যারা বছরে একবারও মাংস খেতে পারে না, তারাও মাংস খাওয়ার সুুযোগ পায়। দরিদ্র বিমোচনেও এর গুরুত্ব রয়েছে। কোরবানির চামড়ার টাকা গরীবের মাঝে বন্টন করার মাধ্যমে গরীব-দুঃখী মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।
লেখকের শেষ মন্তব্য
২০২৪ সালের কোরবানি ঈদ কবে? এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করে আমরা বিস্তারিত ভাবে কোরবানির ঈদ নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনি যদি চান সঠিক নিয়ম মেনে কোরবানি দিতে তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার মনযোগ সহকারে পড়া উচিৎ। কারণ আর্টিকেলটিতে কোরবানি সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা আপনার উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক বিষয় নিয়মিত জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন।
সাফারি a2z এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url